অগ্রদৃষ্টি-স্পোর্টসঃ ম্যাচের ৫২ মিনিটেই ৪-১ গোলে এগিয়ে বার্সেলোনা। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছিল, একতরফা ভাবেই উয়েফা সুপার কাপের শিরোপা জিততে যাচ্ছে ট্রেবল জয়ীরা। কিন্তু, বার্সার ডিফেন্ডাররা মনে হয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ম্যাচ চাননি! তাইতো বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও সেভিয়ার সমতার ফেরার নেপথ্যে ম্যাথিউ-বার্ত্রাদের ব্যর্থতা সহায়ক ভূমিকা রাখে।
অতিরিক্ত সময়ে পেদ্রো রদ্রিগেজের গোলে বার্সার শেষ রক্ষা হয়। ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কাতালানরা। এর মধ্য দিয়ে এক বছরে ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের পথে এগিয়ে গেল বার্সা। ১৪ আগস্ট অ্যাথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে স্প্যানিশ সুপার কাপের চ্যালেঞ্জে নামবে মেসি-সুয়ারেজরা। ন্যু ক্যাম্পে ফিরতি পর্বের ম্যাচটি হবে ১৭ আগস্ট। দুটি ম্যাচই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টায়।
বরাবরের মতোই পুরো ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন লিওনেল মেসি। গোল করেছেন দুটি। তবে বার্সার হয়ে জয়সূচক গোল করে নায়ক বনে যান পেদ্রো। গোল করার পরই বুনো উল্লাসে মাতেন এ স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। হয়তো, ক্লাব ছাড়ার গুঞ্জনের জবাবেই এমন উদযাপন করেন। বার্সা ছেড়ে তার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে পাড়ি জমানোর জোড়ালো সম্ভাবনা রয়েছে।
ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় লিড নিয়ে বার্সাকে ‘ভীতি’ উপহার দেয় সেভিয়া। আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার এভার বানেগার অসাধারণ ফ্রি-কিকটি তাকিয়ে দেখা ছাড়া উপায় ছিল না মার্ক আন্দ্রের স্টেগেনের। অবশ্য, চার মিনিট পর ফ্রি-কিক থেকেই কাতালানদের সমতায় ফেরান মেসি।
লিড নিতেও খুব একটা দেরি করেনি লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। ১৫ মিনিটে নিজের ‘ট্রেডমার্ক’ ফ্রি-কিক থেকে জোড়া গোল পূরণ করেন চারবারের বর্ষসেরা মেসি। নাটকীয়ভাবে ম্যাচের প্রথম তিনটি গোলই আসে ফ্রি-কিক থেকে। প্রথমার্ধ শেষের এক মিনিট আগে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফিনহার গোলে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় কাতালানরা।
দ্বিতীয়ার্ধের সাত মিনিটের মাথায় সার্জিও বুসকেটসের পাস থেকে পর্তুগিজ গোলরক্ষক বেতোকে বোকা বানান সুয়ারেজ। উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারের গোলে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে লুইস এনরিকের শিষ্যরা। কিন্তু, খানিকটা পরেই মূল নাটকীয়তার সূত্রপাত ঘটে।
৫৭ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে মিডফিল্ডার ভিতোলার ক্রস থেকে বল জালে জড়ান স্ট্রাইকার জোসে অ্যান্তোনিও রিয়েস। এর মধ্য দিয়েই ম্যাচে ফেরে সেভিয়া। অবশ্য এ গোলের পেছনে মাশ্চেরানো-ম্যাথিউর মার্কিং দুর্বলতা অনেকাংশে দায়ী ছিল।
পায়ে চোট পাওয়ায় ৬৩ মিনিটে মাঠ ছাড়েন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। এর ৯ মিনিট পরই জেরেমি ম্যাথিউর সৌজণ্যে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। ডি-বক্সের মধ্যে এ ডিফেন্ডার পেছন থেকে ভিতোলার জার্সি ধরে টান দিয়ে মস্তবড় এক ভুল করে বসেন। রেফারিও পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিতে কার্পণ্য করেননি। স্পট কিকে থেকে সেভিয়ার হয়ে গোল করেন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার কেভিন গামেরিও।
নির্ধারিত সময়ের ৯ মিনিট আগে ডিফেন্স দুর্বলতার চূড়ান্ত নিদর্শন প্রদর্শন করে বার্সার রক্ষণভাগ। এ সুযোগে সেভিয়ার হয়ে প্রথমবারের মতো গোল করার উচ্ছ্বাসে ভাসেন বদলি হিসেবে মাঠে নামা ইতালিয়ান স্ট্রাইকার কিরো ইম্মোবাইল। অন্যদিকে, এক প্রকার হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ৪-৪ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৯৩ মিনিটে হাভিয়ের মাশ্চেরানোর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন পেদ্রো।
এক পযার্য়ে ম্যাচটি পেনাল্টি শুটআউটের দিকেই যাচ্ছিল। তবে পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে বার্সাকে জয়োৎসবে ভাসান পেদ্রো। মেসির নেওয়া শটটি বেতো ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বলে তিনি জয়সূচক গোলটি করেন। তারপরও ম্যাচকে টাইব্রেকারে নেওয়ার কয়েকটি সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া করে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়নরা।